উপলব্ধি-০১:
আপনি যখন কোনো উত্পাদনমুখী ব্যবসা করবেন, অন্তত দ্বিগুণ লাভে পণ্য বাজারজাত করুন। দ্বিগুণের নিচে কোনো অবস্থাতেই নামা উচিত হবে না।
যদি নিচে নামেন, তাতে আপনি আপনার ভাত মারবেন, আপনার আরেক ব্যবসায়ী ভাইয়ের ভাত মারবেন, কাস্টমারকে সঠিক গুণগতমানের পণ্য দিতে পারবেন না, এবং আপনার সুনাম নষ্ট হবে, শত্রু বৃদ্ধি পাবে।
ফজিলত-০১:
দ্বিগুণ লাভ করলে আপনি সময়ের সবচাইতে ভালো মানের পণ্যটি ডেলিভারি দেবার সক্ষমতা রাখবেন। পণ্যের মান নিয়ে বড় গলায় কথা বলতে পারবেন। ব্যবসাটি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
ফজিলত-০২
দ্বিগুণ লাভ করলে আপনার ব্যবসাতে টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে। কাজ খুব কম করেও টিকে থাকতে পারবেন। যেহেতু অধিকাংশ নতুন ব্যবসায় টিকে থাকাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কৌশল, সেজন্য টিকে থাকার প্রয়োজনেও আপনাকে নিজের মূল্য না কমানোর দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে। করোনাভাইরাসের এই সময়টাতে অনেকেই এই টিকে থাকার মর্মটি খুব ভালো করে উপলব্ধি করতে পেরেছেন।
ফজিলত-০৩
আপনার
ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। কর্মীদের বেতন-ভাতার ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিন্ত
থাকতে পারবেন। আর ব্যবসা বৃদ্ধি মানে তো কী বুঝিয়ে বলতে হবে না কাউকে। কর্মীরা যদি
বেতন-ভাতা ঠিকটাক পায়, তবে আপনার ডেলিভারি দেওয়া কাজের মধ্যে বাড়তি যে ভ্যালু
যুক্ত হবে, সেটার নাম “শিল্পগুণ“। শিল্পগুণের গুরুত্ব এই “একচেটিয়া পুঁজিবাদী
বাজার ব্যবস্থা“র যুগে নবীন এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফজিলত-০৩.৫
এই সাড়ে তিন নাম্বার ফজিলতটা প্রকৃত অর্থে আমার সবচেয়ে বড় উপলব্ধি। পুরো পোস্টটি আমার তথ্যগত বেহুদা কথাবার্তা, কিন্তু এই কথাটা হলো অভিজ্ঞতার ফসল, একদম “উপলব্ধি“।
“দ্বিগুণ লাভ করলে আপনি উত্পাদিত পণ্যের গ্যারান্টি দিতে পারবেন“
গ্যারান্টির সহজ বাংলা হচ্ছে, আপনার কাজে যদি কোনো ভুল থাকে, তাহলে আপনি নিজের বাপের ভিটা বিক্রি করে রিপ্রোডাকশন করা লাগবে না, কাস্টমারের দেওয়া লাভের অংশ থেকেই পণ্যটা আবার তৈরি করে তাঁকে দিতে পারবেন।
আমার এক কাস্টমার আমার
ওপর অসন্তুষ্ট, যদিও বাজারের সবচেয়ে কমদামে তাঁকে সার্ভিস দিয়েছিলাম। অসন্তুষ্টির
কারণ, তাঁর কাজটাতে বেশ কয়েকটা ভুল হয়ে গিয়েছে। খেয়াল করবেন, আমি ভুলটা স্বীকার
করছি। আপনারা আবার বলে বসবেন না, আমি আত্মপক্ষ সমর্থনের চেষ্টা করছি। যদিও ভুলটা
ঠিক আমার নয়, প্রোডাকশনের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা তৃতীয়পক্ষের ওপর প্রায়শ নির্ভর
করি। সেই তৃতীয়পক্ষের ভুলে পুরো প্রোডাকশনটাই ত্রুটিযুক্ত হয়ে গেছে।
এখন যদি আমি কাজটা তাঁকে মার্কেটের সবচাইতে কমদামে না দিয়ে, দ্বিগুণ লাভ করে দিতাম, তবে কোনো লোকসান না গুণেই কাজটা আবার করে দিতে পারতাম। কিন্তু সেটা তো আর কোনোভাবেই সম্ভব না। আবার বাপের ভিটাবিক্রিও আমি করবো না। অতএব, সেই কাস্টমারটাকে আমি হারালাম, এটাই হচ্ছে মহব্বতের নিয়তি।
অতএব, ভালোবাসা বাড়িতে, গাড়িতে নয়।
(বি.দ্র: লেখাটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নিজের ল্যাপটপে বসে টাইপ করে লেখা। নো কপিকাটপেস্ট। তবে আমি লেখাটার কপিরাইট উন্মুক্ত কইরা দিলাম, যে কেউ যেকোনো জায়গায় #আহমাদ_সালেহ না লিখে নিজের নামে চালিয়ে দিতে পারেন। শুভকামনা, ভালোবাসা, সালাম, এবং সব্বে সত্তা সুখীতা ভবন্তু, জগতের সকল জীব আনন্দে থাকুক)
পুনশ্চ: উপলব্ধি-০২
পড়িতে হইলে সঙ্গেই থাকুন। মরিবার আগে লিখিয়া যাইতে যেন পারি, সেই দোয়াসহ।
No comments: