Looking Video Editor? Designer? Publishing Experts?

Looking Video Editor? Designer? Publishing Experts?
For Your Trusted and Skilled Partners...

আঠারোটি প্রেমের কবিতা

১)
শুরু

হৃদয়খনন শুরু...
আমার কোদাল তোমার জোড়া ভুরু!


২)
ডুব

সুখতলা খেয়ে খেয়ে পদতল চুমে যায় কঠিন পাথর!
পদভ্রজি, রৌদ্রের উত্তাপে উত্তাপে ঘাম ঝরে, ঘাম নয় সুবাসি আতর।
'ভালোবাসি' শব্দের চারপাশে হাওয়া জমে, নাওয়া-খাওয়া ভুলে যায় তারার মহল;
মাঝখানে শূন্যের প্রান্তকে ছুয়ে ছুয়ে আমাকে আবার আমি করি বেদখল।

ও ঘূর্ণি,
রাতের বাতা'ন হও, আরাম কেদারা হও, সংকেতে সংকেতে কাটো অশনি;
এ রাতের ব্যবধানে কোদালে কোদালে খুড়ে, খুঁজে বের করবই সোনার খনি।

বিশ্বাসে দম নিয়ে দিলাম এ ডুব;
সাথে আসো, যদি মন চায়, অপরূপ! আহাঃ অপরূপ!!
                                                           


৩)
আত্মকথন

এসো কবিতায় মাখামাখি হই...
আমিও কবিতা লিখি, জানো নিশ্চই?
এসো শ্যামল বরণ ওগো হৃদপড়শী...
এসো, এবুকের জ্বালাতনে গল্পের বই
এসো, দেখে যাও গল্প যে আছে রাশি রাশি
দেখো, হৃদয়ের নদীটারে, অতল অথৈ...
আমিও কবিতা লিখি জানো নিশ্চই?


আমিও যে কম নই হৃদয়ের ধনে।
তোমার অধিক সেটা জানে কোনজনে?
পথের যে ধুলোকণা, তারও ব্যথা বুঝি
মানুষের দ্বারে দ্বারে হৃদয়কে খুঁজি!
পারিনি মেলাতে শুধু মাত্রার ছক
তাই আমি কবি নই? নিছক কথক?

তাই তুমি খুঁজে ফিরো কবিদের ভীড়ে
আমার সরব সুর সেইখানে কই?
প্রিয়তমা, ঘৃণা করো-" মিছে হইচই।
আমাকে শুনবে তুমি? সন্ধ্যার নীড়ে..

ফিরে যাও; সযতনে মলাট খুলো
সহৃদয় হাতে মুছো জমাট ধুলো
পড়লেই জানবে আমি ছিলাম কবি
কবিতার আসমানে প্রোজ্জ্বল রবি।



৪)
ভালোবেসে

একদিন আকাশের মেঘ আর সাহারার বালুকণার দেখা হয়ে গেলো!

বালুকণা বললো- ভালোবাসবে?

বৃষ্টি বললো- যদি তুমি বাসো!

বৃষ্টির কথা শুনে হেসে উঠলো পুরো সাহারা...
বালিয়াড়ি দুলে দুলে দুহাত বাড়ালো- ওগো বৃষ্টি,
তোমাকেই চাই আমরা। ভালোবেসে
ভালোবেসে আর ভালোবেসে...


অতঃপর লু-হাওয়ার পিঠে চড়ে তারা চললো...
পাড়াগাঁ নামের বেহেস্তে!
সবুজ শস্যেরা ফলে যেখানে...


বালুকণা বৃষ্টিরা যেথা ভালোবেসে
নিমীলিত আঁখি ধীরে মুদে পথশেষে।
                                                           ০৯.০৯.১৭



৫)
মধ্যরাতের কোকিল
তিন পহরের কোকিল...
কী আছে তোমার হৃদয়ে বলো হে;
ডেকে ডেকে ডেকে মাত করে তুলো ধরা?

কাঁপে আসমান
জাগে সঙ্কট
হাঁকে হাঁকে যেন নামিয়ে ফেলবে আকাশের সব তারা!

উপোসী কোকিল; আর্ত কোকিল!
কার প্রেমশরে বিদ্ধ তুমি, এমন আত্মহারা?


৬)
গুণিন
বৃষ্টিহীন এক সময়ে
আকালে নাকাল ভূমিতে
জীবনের প্রয়োজনে ডেকে আনা হলো এক গুণিনকে।
তীব্র মন্ত্রোচ্চারণের আত্মনির্গত লাঙ্গলের কর্ষণে...
ঝুমঝুম নেমে এলো জলধারা।
অদ্ভুদ অসময়ে বর্ষা!!!

বিশ্বাস করো, ওই গুণিন ছিলো এক কবি।
মন্ত্রের শব্দগুলো কবিতা।
হৃদয় তাঁর জন্মের পর থেকে নিঃসঙ্গ মজনু সমান।
ওই গুণিন আমাকে শিখালো, জলধারা ধরে রাখতে হয় না;
উড়ে যেতে দিতে হয় আকাশের যে প্রান্তে যেতে ইচ্ছে তার…

অতঃপর-
ধ্যানের জায়নামাজ পেতে বসো উষর-ধুসর সানুপ্রান্তর…
ডাক দাও আকাশ-বাতাস-সূর্য-চন্দ্র
মহাকাশবিস্তৃত অমিত-অদৃশ্য তারকারাজিকে…

গুণিন!
গুরুমন্ত্র কখনো বৃথা যায় না।
                                                       ০৬.০৪.২০১৮


৭)
তোর নামে

লোহু দরিয়ার তীরে....
আসিয়াছি তোর সন্ধানে প্রিয়
রুহের সওদা লয়ে!

হাতুড়ি বাটালি নে হাতে
টুকে টুকে দেখ বুকের পাঁজরা
কতোখানি গেলো বে-হাতে!

আয় আয় বুকে আয়
হাতুড়ির সাথে পিরিতি আমার
দ্যাখ ধরা ঝলসায়!!!

বিশ্বাস কর, বিশ্বাস কর
সত্যেরে আমি বন্দি...
তোর সাথে মোর প্রণয় যা কিছু
নয় অনু মিছে ফন্দী!

শব্দেরে আমি বানিয়েছি ঘোড়া
লাগাম করেছি সত্যে
উন্মনা মনে তোর সন্ধানে
দাবড়েছি সারা মর্ত্যে।

আয় প্রিয় আয় আয়
এবুকের হু-হু ক্রন্দনে আয়
দুচোখের জলসায়...

রক্তে রক্তে তোর প্রিয় নাম,
স্নায়ুতে স্নায়ুতে বন্দে
তোর নামে নামে সকাল দুপুর
রাত্রি বিকেল সন্ধ্যে!

তোর নামে নামে মগজে চোখেতে
বুকেতে মুখেতে শ্রান্তি
শয়নে স্বপনে দেখি দেখি প্রিয়
তোর সে দিব্যকান্তি!

আয় প্রিয় আয় আয়
সোনার আসন পাতিয়াছি দ্যাখ
এবুকের পাঁজরায়...
                                                           ২২.০৮.১৭




৮)
তোমার সমুদ্রে

মানুষের মিছিলের ময়দানে দাঁড়িয়ে
মানবী তোমার প্রেমে মশগুল মন্থর
বজ্র'কে ভয়হীন বন্ধনে জড়িয়ে
অদ্ভূদ অশ্বেরা দেয় পাড়ি প্রান্তর।

হ্রেষারবে হেসে ওঠে আশমানি কুয়াশা
ক্রন্দনে দেখ দেখ নেমে এলো বৃষ্টি
বৃষ্টির রশি বেয়ে উঠছেরে অখাসা
বন্ধনে মুক্ত সে! একী অনাসৃষ্টি!!!


দুহাত বাড়াও প্রিয়, পতন পতন;
বনে-জনে নির্জন উদাস বাউল
আমারে চাও কি প্রিয় আমার মতন?
প্রেমে ও বিরহে সব নিদান উসুল

স্বাক্ষী ধরার মাটি আকাশের জল
তোমার সমুদ্রে আমি হলাম অচল।


৯)
সনেটে প্রেম
প্রিয়তমা! প্রিয়তমা!! 'নীরদ নয়ন'
শ্রাবণধারায় ঝরো চৈত্রের মাঠে
তৃষ্ণায় এ-চাতক; কতো কাটে সন
ঈপ্সার কাল কাটে শরশয্যাতে...

প্রিয়তমা! পর্বত শৃঙ্গের পরে-
নিশ্চল! এই দিকে দরিয়ার ঘরে
আগুন লেগেছে করে, পুড়ে গেলো সব!
কষ্টেরা দাঁড়কাক; করে কলরব!!

প্রিয়তমা! শুনো শুনো- মৌসুমি বায়;
শঙ্খের দৌত্য; মেঘালয়ে দাঁড়িয়ে-
ঝরো ঝরো জলবতী, ঝরো বর্ষায়
ঝর্ণার নৃত্যে চলো যাই হারিয়ে...।

ডিঙ্গির পাটাতন বুঝবে সে মন্থন
মোরা দোঁহে-দোঁহাতে হলাম সমর্পণ!
                                                           ০৯.০৪.১৭

১০)
গাঙচিল

আমি এখন মুক্ত
উপভোগ করি আকাশের আলো
বাতাসের ঢেউ
মাঝে মাঝে লোভ করি- দেখে যাক কেউ।

কেউ আসে না
দেখে না
চোখ নেই বলে
চিলের খাবার কাড়ে সোনার ঈগলে!

ভাবসাব
তাহাদের
মুক্তির
নেই বাধা কোনোরূপ চুক্তির!!!

বকের ডানায় শুনো সুদূরের সুর?
গাঙচিল পাবে কই ঈগলের জোর?


১১)
কলঙ্ক
চাঁদের গাঁয়ে কলঙ্ক দেখেছো প্রিয়ে...
জানো কী চাঁদের কষ্ট কিসের তরে?
পৃথিবীর এক সরল চাষার মেয়ে...
রূপ দেখে তার, চাঁদ পড়েছিলো ঝরে!

হেসে বলেছিলো- ভালোবাসি মেয়ে খুব!
তোমার জন্য এসেছি মাটির ধরায়।
সাড়া দিলে দেবো প্রেম পাথারে ডুব,
প্লিজ ভালোবাসো, নইলে যে প্রাণ যায়...

চাষাদের মেয়ে, সরল চাষারই মতো,
ছলনা কী, সেটা জানেনি'কো কোনোদিন!
প্রাণভরে সেও বাসলো চাঁদেরে ভালো,
এতেই দুনিয়া হয়ে গেলো রঙ্গিন!!

এমনি করে যাচ্ছিলো দিন সুখে...
একদা হঠাৎ কী হল কী জানি দুখে,
চাষাদের মেয়ে কাটালো ধরার মায়া,
কাঁদালো সবারে, রেখে গেলো তার ছায়া।

রাত্রির প্রেমে উঠলো আকাশে চাঁদ!
সেতো জানে না, তার প্রিয়া নেই ভবে
অপেক্ষাতে কষ্টে কাটালো রাত,
পরদিনও নেই, শুধালো- কী হল তবে?

শুনলো যখন, প্রিয়া তারে গেছে ছাড়ি...
বুক ভেঙে এলো, কলিজাটা হলো খালি
"না বলে, সে কেন চলে গেলো বলো দূরে?"
কাঁদে একা চাঁদ দুঃখে গুমরে গুমরে!

তাঁর কান্নার শব্দ শুনে না পৃথিবীর কোনো পাখি!
তাঁর কষ্টের কাব্য লেখে না, মুছে কোনো কবি আখীঁ।
দেখে না কেহই, হৃদয়ে চাঁদের জ্বলছে অগ্নিগিরি,
ঝলসে যাচ্ছে দুঃখে যে হায়, দুধেল চাঁদের বাড়ি!

আজো ওঠে চাঁদ, পৃথিবীর বুকে নামে জ্যোৎস্নার ঢেউ
কেবল চাঁদের কষ্ট যে, হায়, বুঝলো না আর কেউ!



১২)
দরিয়া
নদী,
ছল ছল ছল, বাহারী সজল
বয়ে চলো পেরিয়ে, কতো দিগ অন্ত

শুনি,
গান গাও কী মধুর কল কল কল
রূপে গুণে অতুল্য, ধনে ধনবন্ত!

আমি,
হেঃ হেঃ আমি,
দরিয়ার জল সেতো অপেয় নোনতা
কোন বোকা বলো এসে মুখ দেবে হেসে

এ জল ডুবায় আর ভাসায় কাঁদায়
তোমাদেরও গ্রাস করে হায় অবশেষে!

তবু,
বুক পেতে ডাকে ওরে আয় আয় আয়
আয় নদী নিচে নেমে, আয় দরিয়ায়!!!



১৩)
তোমাকে
তুমি-আমি এবং তুমি-আমি;
ভেতর-বাহির মিলে চারজন।

ভালবাসা চেয়েছিল হবো আমরা,
চারজন মিলে শুধু একজন।

ফুল আমি নই,
সেটা ভাল করে জানো।

তবু যদি করে ফেল ভালবাসা ভুল!
দরিয়ার মত করে বুক পেতে দেব,
"গাঙের ঢেউয়ের মতো বলো কন্যা, কবুল কবুল।"


১৪)
একটি শব্দে
তোমার সাথে কথা বলে তৃপ্তি কেন নাই!
যতো বলি, ততো বাড়ে কেবল তৃষ্ণা!

সাপের গরল যদি থাকে,
একটুকু দিয়ো পানের তরে!
জীবন্মৃত্যুর মাঝখানে আর পারি না!

এক ফোটা অশ্রুর জোরে হাসি..
আমার যা ছিলো তার সব দিয়ে দিলাম।
একটি শব্দে শুধু-   ভালোবাসি!!!


১৫)
তৃষ্ণা

তৃষ্ণা, তৃষ্ণা, তৃষ্ণা....

জল-তেষ্টা, সে তো বিতৃষ্ণা!

আমার তৃষ্ণা দেখার...
শুনার...
শুনাবার...
আফসুস, তুমি এতো দূরে!

মনে হয় তুমি থাকো আকাশের সীমানায়,
আমি থাকি পাতালের গভীরে!

তবু আফসুস, এতো বেশি দূরে নই দুজনে!
মুটোফোনে দু-বাটন প্রেস
ওপারে তোমার গলা- 'হ্যালো'
অর্ধেক তৃষ্ণা তো এখানেই শেষ...

তবু এতো দূরে, দূরে, দূরে...
আমার তৃষ্ণা বাড়ে, বাড়ে, আর বাড়ে!

(পৃথিবীর সব প্রেমিক, প্রেমিকা, বন্ধু, মা-বাবা, অথবা হৃদয়ের খুব কাছের আপনজন...
যে যার জন্যে তৃষিত, সবার হৃদয়ের উদ্দেশ্যে)


১৬)
তোমায় দেখে

কবিতা সব মিথ্যে হয়ে গেলো...
শব্দেরা সব পথ ভুলে যায়,
হারায় এলোমেলো।

তুমি যখন ছিলে দূরে, ছিলো অভিমান...
আসলে কাছে, বাসলে ভালো, গাইলো পাখি গান...
কষ্ট যতো, ছিলো আমার হারিয়ে কোথায় গেলো?

তোমায় দেখার আগে কভু, ভাবিনি তো হায়...
প্রেম জ্বালাতন, প্রেম অসহায়, প্রেম- কে আর চায়?
এখন দেখি, প্রেমই জীবন, প্রেম জীবনের আলো!!!

এই পৃথিবীর, দুই মেরুতে, আমি খুঁজে ফিরি-
কোথায় আছে, সুন্দর-সে, কোথায় যে তার বাড়ি?
তোমায় দেখে, সুন্দরেরা লজ্জাতে পালালো।।



১৭)
মেয়ে তুমি
মেয়ে তুমি অভিমানে চলে গেলে দূরে
ভাবলে'না কবি কতো অসহায়!
দেবার মতন তার নেই কিছু আর,
ভাঙা এক হৃদ শুধু রইলো সহায়।



১৮)
নিরস প্রেমের কবিতা

একটা হাতুড়ি ডানে, আরেকটা নেই কোথাও
মহিষ লাঙল টানে, রাগলে মারে গুতাও

এইটা আমার কথা,
বৃষ্টি দিনের ছাতা
বজ্রপাতের ঘুম
ভাসায়ে দিলাম চুম...

চোখ দেখেনি, মন দেখেনি, কান শুনেনি গান
তবুও দ্যাখো, দুধফোয়ারায় ভরন্ত আসমান!!!                                           
১৩.১২.২০১৭


আঠারোটি প্রেমের কবিতা আঠারোটি প্রেমের কবিতা Reviewed by আহমাদ সালেহ on April 07, 2018 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.